হৃদরোগ: রোগী ও পরিবারের সদস্যদের করণীয়

হৃদ রোগ হঠাৎ করেই প্রকাশ পায়।এবং তা যদি পরিবারে প্রথম ঘটনা হয় তবে রোগী ও তার স্বজনরা অনেকটাই ভেঙ্গে পরেন।বুঝতে পারেন না এখন কি করবেন, কিভাবে করবেন! হৃদরোগে আক্রান্ত  হলে রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের জীবনে কিছু পরিবর্তন আসবে ঠিকই, কিন্তু এর মাঝেও যে জীবনকে উপভোগ করা যায় তা বুঝতে হবে এবং রোগীকেও বোঝাতে হবে।

১.রোগের প্রথম ধকল কাটিয়ে কিছুটা সুস্থ হলে আপনার রোগ সর্ম্পকে ধীরে ধীরে কিছু  পড়া লেখা করুন। সহজ ভাষায় লেখা এমন বই বেছে নিন।খবরের কাগজ, সাময়ীকি, ব্লগ যেখানে আপনার রোগ সর্ম্পকে লেখা পাবেন,পড়ে দেখুন এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে শেয়ার করুন।এটা সব সময় আপনাকে সচেতন থাকতে সাহায্য করবে।
২.আমাদের দেশের মহিলারা নিজের রোগকে কোন গুরুত্বই দেন না। তাই রোগী যদি মহিলা হোন, তবে তার পরিবারের অন্য সদস্যদের উচিৎ তার ব্যাপারে যত্নশীল হওয়া,তাকে বার বার সচেতনতামূলক তথ্য গুলো মনে করিয়ে দিন।
৩.এখনও আমাদের দেশে খাবার তৈরীর প্রধান দায়িত্ব বাড়ির মহিলাদের উপরই থাকে।তাই বাড়ীর মহিলা সদস্যদের জানতে হবে  যে কোন খাবার রোগীর জন্য উপকারী এবং কোন গুলো  তার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
৪. পুরুষ রোগীরা ডায়েটিশিয়ানের সাথে আলাপ করার সময় স্ত্রীকে সাথে রাখুন। তাহলে তিনি খাবারের পরিমাপ, রান্না পদ্ধতি ঠিক মত বুঝে নিতে পারবেন।
৫.ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যসম্মত রান্নার পদ্ধতি ও রেসেপি সংগ্রহ করতে থাকুন। বড় লাইব্রেরীগুলোতে  রান্না বিষয়ক বইয়ের ভাল সংগ্রহ আছে।এছাড়া ইন্টারনেটে হৃদরোগীদের খাবার রান্নার পদ্ধতি ও রেসিপি নিয়ে প্রচুর তথ্য আছে।তবে বাঙালী খাবারের রেসিপি ততটা সমৃদ্ধ না, এক্ষেত্রে মুল রেসেপি থেকে কন্সেপ্ট নিয়ে আমাদের দেশে যে উপকরণ আছে তা দিয়ে রান্না করুন।
৬.রান্নার জন্য low-fat methods ব্যবহার করুন। bake, broil, microwave, roast, steam, poach, lightly stir fry বা sauté- এ পদ্ধতি গুলো অনুসরন করা উচিৎ।
৭.ধরা যাক , গরুর মাংস রোগীর খুবই  পছন্দের খাবার । কিন্তু রোগের কারণে এখন তা খাওয়া নিষেধ। পরিবারের অন্য সদস্যদের তো আর খেতে নিষেধ নাই! এমন অবস্থায় ভারসাম্য আনবেন কিভাবে?এক্ষেত্রে করণীয় হল-আগে যদি সপ্তাহে ১/২ দিন গরুর মাংস রাখা হতো মেনুতে তাহলে তা এখন কমিয়ে মাসে একবার রান্না করুন। মিষ্টি জাতীয় খাবারে রেস্ট্রিকশন থাকলে একই খাবার রোগীর জন্য আলাদা করে রান্না করুন। লবণ রেস্ট্রিকটেড হলে প্রথমে সামান্য লবণ দিয়ে তরকারী রান্না করে রোগীর জন্য পরিমানমত তুলে রাখুন। এরপর বাকি তরকারীতে স্বাদ মত লবণ দিন। এভাবে ছোট খাট বিষয় গুলোতে যদি ভারসাম্য আনা যায় তবে রোগী নিজের রোগ নিয়ে বিষন্ন হবেন না।পরিবারের সদস্যদেরও তেমন কোন অসুবিধা হবে না।
৮.রোগীর পাশাপাশি কম তেলে রান্না করা খাবার খাওয়ার অভ্যাস সবার গড়ে তুলতে হবে।
হদৃরোগের কারণে রোগী ও তার পরিবারের সকলের জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আসবেই। এটাকে পজিটিভ ভাবে গ্রহণ করুন।রোগীকে মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখুন।পরিবারের সার্পোট থাকলে কঠিন রাস্তাও সহজে পার করা সম্ভব।

Related posts

Leave a Comment