হাসি-গানে কমুক রক্তচাপ

laughter

laughterগবেষণায় দেখা গেছে, সংগীত ও হাসির সেশনে যোগ দিয়ে কমানো গেছে রক্তচাপ। মধ্যবয়সী পুরুষ ও নারীরা বেশি বেশি হেসে এবং যে সংগীত তাঁদের প্রিয়, সেগুলো শুনে শুনে কমাতে পারেন রক্তচাপ।
জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা দেখলেন যে গান শুনে বা হেসে রক্তচাপের ওপর কী প্রভাব পড়ে। দুটি পরিস্থিতিতে এ প্রভাব তাঁরা পর্যবেক্ষণ করলেন।
গান শোনা বা হাসার অব্যবহিত পর কী হয় এবং প্রতি দুই সপ্তাহ পর পর একবার, তেমন করে তিন মাস পর্যন্ত কী হয়, তাও তাঁরা দেখলেন।
বিজ্ঞানীরা এ জন্য নিলেন ৪০ থেকে ৭৪ বছর বয়স পর্যন্ত ৭৯ জন লোক; যাঁদের ইতস্তত দেওয়া হলো দুই দলের যেকোনো দলে। ৩২ জন গান শুনলেন, ৩০ জন হাসলেন এবং ১৭ জন হাসি বা গান কোনো সেশনেই অংশ নিলেন না।
যাঁরা মিউজিক গ্রুপে, তাঁরা নিজেরা গান গাইলেন, শুনলেন ও গান শুনে হাত-পা ছুড়লেন। তাঁদের নিজের ঘরে সংগীত শ্রবণের জন্য বলা হলো।
যাঁরা হাসির গ্রুপে, তাঁরা হাসি ও যোগব্যায়াম—দুটিতেই যোগ দিলেন। শ্বাসক্রিয়া ব্যায়াম এবং সেই সঙ্গে চোখে চোখে মধুর দৃষ্টি বিনিময়ে উদ্দীপ্ত হাসির সেশন। তাঁরা আরও দেখলেন, জাপানি হাসির ছবি রাকুগো। প্রতি সংগীত ও হাসির সেশনের আগে ও পরে রক্তচাপ মাপা হলো।

রক্তচাপের ওপর প্রভাব
তিন মাস পর গবেষকেরা বললেন, যাঁরা সংগীতের সেশনে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের রক্তচাপ নেমে এল তাৎপর্যপূর্ণভাবে—ছয় মিলিমিটার কমে এল।
যাঁরা হাসির সেশনে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের রক্তচাপ কমল পাঁচ মিলিমিটার; মিউজিক সেশনের অব্যবহিত পরে রেকর্ড করা রক্তচাপে দেখা গেল তা কমেছে ছয় মিলিমিটার আর হাসির সেশনের অব্যবহিত পরে রক্তচাপ কমল সাত মিলিমিটার। তুলনামূলক অন্য গ্রুপে রক্তচাপে তেমন হেরফের হলো না।
গবেষকেরা অবশ্য বললেন যে গান শুনে বা হেসে যে আপাতদৃষ্ট হিতকরী প্রভাব, তা দীর্ঘমেয়াদি হবে কি না তা স্পষ্ট নয়। তবু এ ফলাফলে বোঝা যায়, গান গেয়ে, শুনে এবং হেসে রক্তচাপ কমানো যায়। তবে পুরো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রয়োজন আরও বড় গবেষণা।
এই গবেষণাপত্রটি পেশ করা হলো আটলান্টায় আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের নিউট্রিশন, ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি এবং মেটাবলিজম/কার্ডিওভাসকুলার ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড প্রিভেনশন-২০১১-এর বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে।
যা হোক, যাঁদের রক্তচাপ বেশি, তাঁরা বেশি বেশি হাসুন, গান শুনুন, সম্ভব হলে গান গাইতে থাকুন। লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই।

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস,
বারডেম হাসপাতাল,
সাম্মানিক অধ্যাপক,
ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ,
ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ১৩, ২০১১

Related posts

Leave a Comment