রোগের নাম শ্যানক্রয়েড

শ্যানক্রয়েড হলো একটি যৌনবাহিত সংক্রমণ। এর বৈশিষ্ট্য হলো যৌনাঙ্গে যন্ত্রণাদায়ক ঘা। যৌন সংসর্গের মাধ্যমে শ্যানক্রয়েড একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায়।

কারণ শ্যানক্রয়েড একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। এ রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার নাম ‘হিমোফাইলাস ডুকরে।’ রোগটি সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বেশি দেখা যায়। এটার সাথে বাণিজ্যিক যৌনকর্মী ও তাদের খদ্দেরদের সম্পর্ক রয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোতে সংক্রমণের হার কম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে যাদের শ্যানক্রয়েড হয়েছে তারা ইতঃপূর্বে কোকেন ব্যবহার করেছেন এবং পতিতালয়ে গেছেন। খৎনা করানো পুরুষদের চেয়ে খৎনা না করানো পুরুষদের শ্যানক্রয়েড আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তিনগুণ বেশি। শ্যানক্রয়েডের রোগীদের এইডস হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

উপসর্গ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার একদিন থেকে দু’সপ্তাহ পর ছোট গোটা দেখা দেয়। একদিনের মধ্যে এটা ঘায়ে পরিণত হয়। ঘা বা ক্ষতের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে:

আকার ৩ থেকে ৫০ মি.মি. (১/৮ ইঞ্চি থেকে দু’ইঞ্চি) হয়, ব্যথা পূর্ণ হয়। ক্ষতের কিনারাগুলো তীক্ষ্ণ এবং নিচের দিকে ডাবানো হয়। কিনারাগুলো অনিয়মিত বা এবড়ো থেবড়ো হয়। গোড়া ধূসর কিংবা হলুদাভ ধূসর পদার্থ দিয়ে আবৃত থাকে। আঘাত লাগলে কিংবা পর্দা তুলে ফেললে গোড়া থেকে সহজেই রক্তপাত হয়।

সংক্রমিত প্রায় অর্ধেক পুরুষের কেবল একটি একক ঘা থাকে। মহিলাদের ক্ষেত্রে চারটি বা তার বেশি ঘা দেখা যায়, সেই সাথে অল্প কিছু উপসর্গ থাকে। ঘাগুলো নির্দিষ্ট জায়গাতে হয় যেমন পুরুষের খৎনা না করানো লিঙ্গমুণ্ডুর করোনাল সালকাসে কিংবা মহিলাদের যোনির ক্ষুদ্র ওষ্ঠে। পুরুষের সাধারণ স্থানগুলো লিঙ্গের মাথার ত্বক (এখানে সবচেয়ে বেশি হয়)

লিঙ্গের মাথার পেছনে কাটা খাঁজ (করোনাল সালকাস) লিঙ্গের শরীর লিঙ্গের মাথা (লিদ্র (মূত্রনালির মাথা) অন্ডথলি (এখাঙ্গেমুণ্ডু) লিঙ্গের মাথার পিছন সবচেয়ে কম হয়। মহিলাদের সাধারণ স্থানগুলো মহিলাদের ঘা সবচেয়ে বেশি হয় ল্যারিয়া মেঝোরাতে। অন্যান্য স্থানের মধ্যে রয়েছে ল্যারিয়া মাইনোরা, পায়ু এলাকা ও উরুর ভেতরের দিক। মহিলাদের ক্ষেত্রে খুব সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে প্রস্রাব করার সময় ব্যথা করা এবং যৌন মিলনের সময় ব্যথা করা। প্রথমদিকে শ্যানক্রয়েডের ঘা-কে অনেকে ‘শক্ত’ শ্যাংকার বলে ভুল করতে পারেন, যা প্রাথমিক সিফিলিসের বিশেষ ঘা এবং এটা শ্যানক্রয়েডের ‘নরম শ্যাংকার’- এর সম্পূর্ণ বিপরীত।

আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কুঁচকির লসিকাগন্থিগুলো বড় হয়। অনেকের পুঁজ হয়ে ফেটে যায়।

চিকিৎসা

সাধারণত একক মাত্রায় মুখে অ্যাজিথ্রোমাইসিন অথবা মাংসপেশি পথে একক মাত্রায় সেফট্রায়াক্রন অথবা সাতদিন মুখে ইরাথ্রোমাইসিন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।

Related posts

Leave a Comment