মাইট্রাল ভাল্ভের রোগ
মাইট্রাল স্টেনোসিস (মাইট্রাল ভাল্ভ সরু হয়ে যাওয়া)
একজন স্বাভাবিক পরিণত মানুষের মাইট্রাল ভাল্ভের ব্যাস ৪-৬ বর্গ সেন্টি মিটার, এটা কখনো ২ বর্গ সেন্টি মিটার এর চেয়ে কমে আসলে তাকে মাইট্রাল স্টেনোসিস বলা হয়। বলতে গেলে এর একমাত্র কারণ হলো রিউমেটিক ফিভার বা বাত জর।দুর্বল লাগা, শ্বাস কষ্ট, কফ কাশি, কফের সাথে রক্ত যাওয়া, বুক ধরফর করা, পায়ে পানি আসা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষন। ইকোকার্ডিওগ্রাম করে এটা নিশ্চিত করা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ ঔষধে নিয়ন্ত্রন করা গেলেও এক পর্যায়ে ইন্টারভেনশন করে বেলুন ভাল্ভোপ্লাস্টি করতে হয়। তবে এই রোগের চুড়ান্ত বা শেষ চিকিৎসা হলো সার্জারি করে ভাল্ভ বদলে ফেলা (ভাল্ভ রিপ্লেসমেন্ট)। ভাল্ভ রিপ্লেসমেন্ট জটিল অপারেশন হলেও নিয়ম মেনে চললে এর পর রোগী চল্লিশ বছর পর্যন্ত সুস্থ্য থাকতে পারে।
{module Google 486*60}
মাইট্রাল রিগারজিটেশন
মাইট্রাল ভাল্ভ এর পাপড়ির মত কপাটিকা গুলো ঠিক মতো বন্ধ হতে না পারলেই তাকে মাইট্রাল রিগার্জিটেশন বা মাইট্রাল ভাল্ভ প্রলাপ্স রোগ বলা হয়। হার্ট এর মধ্যে রক্ত সবসময় এট্রিয়াম থেকে ভেন্ট্রিকল অর্থাৎ এক দিকে প্রবাহিত হয়। এই রোগে কিছু রক্ত উলটো পথে চলে যায়। এর ফলে শ্বাস কষ্ট, কফ কাশি, কফের সাথে রক্ত যাওয়া, বুক ধরফর করা, পায়ে পানি আসা ইত্যাদি উপসর্গ গুলো দেখা দেয়। এই রোগ ও ইকোকার্ডিওগ্রাম করে নিশ্চিত করা যায়। বাত জর ছাড়াও অন্য রোগের জটিলতা হিসেবে এই রোগ হতে পারে। সার্জারিই এই রোগের একমাত্র চুড়ান্ত চিকিৎসা।
এওরটিক ভালভের রোগ
এওরটিক স্টেনোসিস
এর অর্থ এওরটিক ভাল্ভ সরু হয়ে যাওয়া। এই রোগ হলে হৃদপিন্ড থেকে ধমণীতে রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয়। একজন স্বাভাবিক পরিণত মানুষের এওরটিক ভাল্ভের ব্যাস ২-৪ বর্গ সেন্টি মিটার, এটা কখনো ০.৮ বর্গ সেন্টি মিটার এর চেয়ে কমে আসলে তাকে এওরটিক স্টেনোসিস বলা হয়। এর প্রধান কারণ হলো ভাল্ভের গায়ে ক্যালসিয়াম জমা, এছাড়া জন্মগত কিছু ত্রুটি এবং রিউমেটিক ফিভার বা বাত জর ও এর কারণ হিসেবে পরিচিত। অল্প একটু পরিশ্রম করলেই শ্বাস কষ্ট হওয়া বা বুকে ব্যথা হওয়া, হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষন। এই রোগে এমনকি হঠাৎ করেও কারো মৃত্যু হতে পারে, তাই রোগ নির্ণয় এর পর রোগী কে অবশ্যই বিশ্রামে থাকতে হবে। ইকোকার্ডিওগ্রাম করে এই রোগের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়। উপসর্গ দেখা দিলে সার্জারি করে ভাল্ভ বদলানোই (ভাল্ভ রিপ্লেসমেন্ট) এই রোগের একমাত্র চিকিৎসা। ভাল্ভ রিপ্লেসমেন্ট এর পর নিয়ম মানলে রোগী অনেক বছর ভালো থাকতে পারে।
এওরটিক রিগারজিটেশন
এওরটিক ভাল্ভ এর পাপড়ির ন্যায় কাস্প গুলো কোনো কারণে একই সাথে বন্ধ হতে না পারাটাই এওরটিক রিগার্জিটেশন। এর ফলে হৃদপিন্ড থেকে পাম্প করে পাঠানো রক্ত ধমণী থেকে আবার হৃদপিন্ডে ফিরে আসে। ভাল্ভে ক্যালসিয়াম জমা, রিউম্যাটিক রোগ, জন্মগত ত্রুটি, কিছু প্রদাহ জনিত রোগ, ব্যাক্টেরিয়াল এন্ডকার্ডাইটিস সহ এই রোগের বহুবিধ কারন রয়েছে। এওরটিক স্টেনোসিস এর মতই পরিশ্রম করলে শ্বাস কষ্ট হওয়া বা বুকে ব্যথা হওয়া, হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষন। এই রোগের উপস্থিতি ও ইকোকার্ডিওগ্রাম করে নিশ্চিত করা হয়। উপসর্গ দেখা দিলে সার্জারি করে ভাল্ভ বদলানোই (ভাল্ভ রিপ্লেসমেন্ট) এই রোগের একমাত্র চিকিৎসা। ভাল্ভ রিপ্লেসমেন্ট এর পর নিয়ম মানলে রোগী অনেক বছর ভালো থাকতে পারে।