রেনাল ফেইলুর (Renal failure)

বৃক্ক বা কিডনির (kidney) কাজ মূলত চারটি।

১। মূত্র তৈরী ও তার মাধ্যমে শরীরের অপ্রয়োজনীয় বর্জ পদার্থ বের করে দেয়া,

২। শরীরের অতিরিক্ত পানি ও মৌল বের করে দিয়ে এদের ভারসাম্য রক্ষা করা,

৩। জরুরী কিছু হরমোন তৈরী করা এবং

৪। ভিটামিন ডি ও ক্ষুদ্র কিছু আমিষের বিপাক ঘটানো। কিডনি যখন প্রথম কাজ দুটি করতে ব্যর্থ হয় তখনরেনাল ফেইলুর হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়।

রেনাল ফেইলুর দুই প্রকার। এর মধ্যে যেটি এক্যুট (acute) বা হঠাৎ করে হয় তার তীব্রতা কম এবং সময়মতো সঠিক চিকিৎসা করলে পুরোপুরি ভালোও হয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে যেটি অনেক দিন ধরে ধীরে ধীরে হয় এবং ক্রমাগত চলতেই থাকে তাকে ক্রনিক (chronic) রেনাল ফেইলুর বলে। আসলে দুটি কিডনিরই উল্লেখযোগ্য অংশ কোনো কারনে স্থায়ীভাবেনষ্ট হয়ে গেলে তখন ক্রনিক রেনাল ফেইলুর হয়, এ রোগে কিডনি তার কাজ করার চারটি ক্ষমতাই হারায়, আর তাই এই রোগের পরিণতি ও বেশ খারাপ।

ক্রনিক রেনাল ফেইলুর হলে রোগী খুব দুর্বল ও ক্লান্ত হয়ে যায়। রক্ত শূন্যতা দেখা দেয়া, অস্থি ক্ষয় হওয়া, উচ্চ রক্তচাপ,শ্বাসকষ্ট, প্রসাবে ইনফেকশন, মাসিক অনিয়মিত হওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি এই রোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।

এ রোগ হলে রক্তে ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন, পটাসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই রক্ত পরীক্ষাসহ মূত্রের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা এবং এক্সরে, আলট্রাসনোগ্রামসহ অন্যান্য পরীক্ষাও করা লাগতে পারে। নেফ্রলজিস্ট (nephrologist) বা কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানেই কেবল এই রোগের চিকিৎসা করানো উচিত।

এ রোগে পরিমিত পানি, আমিষ ও লবন খেতে হয়। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন, রক্ত শুন্যতা থাকলে তা দূর করণসহ নানারকম নিয়ন্ত্রনের মধ্যে থাকতে হয়। ক্রনিক রেনাল ফেইলুর কখনো চিরতরে ভালো হয়ে যায়না, চিকিৎসার এক পর্যায়েডায়ালাইসিস করার প্রয়োজন দেখা দেয়, এতেও যখন রোগ নিয়ন্ত্রন করা যায়না তখন কিডনি বদল বা রেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশন (renal transplantation) করা অনিবার্য হয়ে পরে।

Related posts

Leave a Comment