ব্রেইন স্ট্রোকঃ কিছু কথা

স্ট্রোক

স্ট্রোক কিঃ

স্ট্রোক বলতে অনেকেই ভাবেন হার্ট অ্যাটাককে। আসলে তা নয়। স্ট্রোক মানে ব্রেইন স্ট্রোক। এটা মস্তিস্কের একটা মারাত্নক সমস্যা। মস্তিষ্কের রক্তনালির দুর্ঘটনাকেই স্ট্রোক বলা যায়। এ দুর্ঘটনায় রক্তনালি বন্ধও হতে পারে, আবার ফেটেও যেতে পারে।

 

স্ট্রোক কাদের হয়ঃ

 

একসময় সাধারনত বৃদ্ধ থেকে মধ্যবস্ক ব্যক্তিদের মাঝে এটি বেশি দেখা যেত কিন্তু বর্তমানে অল্প বয়সেও স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার ঘটনা ঘটছে।

নারী থেকে পুরুষদের মাঝেই কিছুটা বেশি দেখা যায়।

 

স্ট্রোক কয় প্রকারঃ

 

স্ট্রোক
ছবির বাম পাশে ইস্কেমিক স্ট্রোক(অধিক কালো অংশ) দেখা যাচ্ছে

 

স্ট্রোক মূলত দুই প্রকার- ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং হেমোরেজিক স্ট্রোক।

 

ইস্কেমিক স্ট্রোকে আঞ্চলিকভাবে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে মস্তিস্কের ওই অঞ্চলটি রক্ত পায়না এবং মারা যায়।

হেমরেজিক স্ট্রোকে রক্তনালি ফেটে গিয়ে রক্ত মস্তিস্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং মস্তিস্কের উপরে চাপ সৃষ্টি করে। এতে মস্তিস্ক তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

 

স্ট্রোকের কারণঃ

 

উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় কারণ।অন্যান্য কারণের মধ্যে

  1. বেশি কোলেস্টেরল
  2. ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ
  3. ধুমপান
  4. স্থূলতা
  5. মদ্যপান
  6. পরিবারে অন্য কারো স্ট্রোকের ইতিহাস
  7. হৃদরোগ  ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য

 

স্ট্রোকের লক্ষণসমুহঃ

 

  1. মাথা ঘুরানো, হাটতে অসুবিধা হওয়া, ভারসাম্য রক্ষায় অসুবিধা হওয়া
  2. কথা বলতে সমস্যা হওয়া
  3. অবশ, দুর্বলতা লাগা, শরীরের এক পাশ অকেজো হওয়া, অনেকসময় চার হাত-পাই অবশ হয়ে যাওয়া
  4. চোখে ঘোলা লাগা, অন্ধকার লাগা বা ডাবল দেখা
  5. হঠাৎ খুব মাথা ব্যথা করা
  6. বমি করা

 

স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়ঃ

 

স্বাস্থ্যসম্মত জীবনব্যবস্থা বজায় রাখলে অনেক খানি ঝুকি কমানো যায় :

  1. ব্লাড প্রেসার জানা এবং কন্ট্রোল করা
  2. ধুমপান না করা
  3. কোলেসটেরল এবং চর্বি জাতীয় খাবার না খাওয়া
  4. নিয়ম মাফিক খাবার খাওয়া
  5. সতর্ক ভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা
  6. নিয়ম করে হাটা বা হালকা দৌড়ানো
  7. দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করা
  8. মাদক না নেয়া , মদ্য পান না করা

 

স্ট্রোক হলে সাথে সাথে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। একজন বিশেষজ্ঞ স্নায়ুবিদের তত্ত্বাবধানে থেকে রগির চিকিৎসা করাতে হবে। স্ট্রোক সাধারনত পুরোপুরি ভালো হয় না। রোগীকে সবসময় যত্নের মাঝে রাখতে হয়। ফিজিওথেরাপি করানোর প্রয়োজন হতে পারে।

 

পরিশেষে এটা বলা যায় স্ট্রোকের ক্ষেত্রে প্রতিরোধই সবচেয়ে বড় চিকিৎসা। নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই পারে স্ট্রোক থেকে অনেকাংশে মুক্ত রাখতে।

 

 

 

ডা. রায়হান কবীর খান

 

Related posts

Leave a Comment