ভ্যাসেকটমি

ভ্যাসেকটমি স্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রনের একটি পদ্ধতি। পুরুষের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। অন্ডকোষে যে দুইটি শুক্রাশয় (Testes) থাকে তা থেকে ভাস (Vas difference) নামক দুটি পৃথক নালী দিয়ে শুক্রানু বা বীর্য পুরুষাঙ্গের শীর্ষে পৌছায়। ভ্যাসেকটমি অপারশনের মাধ্যমে অন্ডকোষের নীচের দিকে খুবই ছোট্ট একটি অংশের চামড়া কেটে ঐ ভাস দুটিকে বেধে কেটে দেয়া হয়। এর ফলে বীর্যপাতের সময় বীর্য রস (Semen) আসলেও তাতে কোনো শুক্রানূ (Sperm) থাকেনা ফলে যৌন মিলন ঘটলেও স্ত্রীর গর্ভধারন করার সম্ভাবনা থাকেনা। এটা খুবই ছোট্ট একটা অপারেশন, এর জন্য হাসপাতালে ভর্তি হবার ও প্রয়োজন হয়না।

অপারশনের পরপরই এটা কার্যকর হয়না, প্রথম ৩০-৪০ বার মিলনে কন্ডম বা অন্য পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়, এরপর আর অন্য কোনো পদ্ধতির সাহায্য নেবার প্রয়োজন পড়ে না। এটা জন্মনিয়ন্ত্রনের ১০০% নিশ্চিত একটি পদ্ধতি। ভ্যাসেকটমি করার পর সন্তান নেবার ইচ্ছা হলে আবার অপারেশন করে কেটে দেয়া ভাস দুটি জোড়া লাগিয়ে দেয়া যায় এবং সন্তান ধারন করা সম্ভব হয়। যদিও এই দ্বিতীয় অপারেশনটির সফলতার হার কম।

ভ্যাসেকটমি করার আগে অবশ্যই দম্পতির নুন্যতম দুটি সুস্থ সন্তান থাকতে হবে, এতে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই সম্মতি থাকতে হবে। কিছু কিছু পুরুষ ভ্যাসেকটমি করার পর মানসিক ভাবে দুর্বল হয় পরতে পারে এবং তার যৌনইচ্ছা কমে যেতে পারে তবে তা চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নিরাময় করা সম্ভব। কারো কারো ক্ষেত্রে অন্ডকোষে স্পার্ম গ্রানুলোমা (Sperm granuloma) নামক একটি সমস্যা হতে দেখা যায় যদিও তা তেমন জটিল কোনো সমস্যা নয়। ভ্যাসেকটমি স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রনের খুবই কার্যকর এবং কমদামী একটি পদ্ধতি, জনমনে এ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়িয়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে একে একটি বিশাল উপাদান হিসেবে ব্যবহার করার অবারিত সুযোগ রয়েছে।

Related posts

Leave a Comment