ফুসফুসের মধ্যে যদি কোনো কারণে পুঁজ জমে তবে তাকে ফুসফুসের ফোঁড়া বলা হয়। ফুসফুসের ফোঁড়া বহুবিদ কারণে সৃষ্টি হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া রোগ ঠিক সময়মতো চিকিৎসা না হলে তা থেকে ফুসফুসে পুঁজ জমে বা ফোঁড়া হতে পারে। কখনো কখনো এ ফোঁড়া থেকে পুঁজ বের হয়ে যেতে পারে তখন শুধু ক্যাভিটি থাকে। নাক, মুখ বা গলায় অপারেশন করার সময় জীবাণু ফুসফুসে ঢুকে ফোঁড়া সৃষ্টি করতে পারে। দেহের অন্য কোনো স্থানের সংক্রামক পীড়ার জীবাণু ফুসফুসে বাহিত হয়ে ফোঁড়া সৃষ্টি করতে পারে। ফুসফুসের ফোঁড়া হঠাৎ বা ধীরে ধীরে শুরু হতে পারে। বুকে ব্যথ্যা সাধারণত থাকেই। জ্বর, বুকে ব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট প্রভৃতি লক্ষণ নিয়ে শুরু হয়। কাশির সাথে প্রচুর কফ বের হয়, কফ পচা, দুর্গন্ধযুক্ত, হলুদ। কখনো কখনো রক্ত মিশ্রিত হতে পারে। ফোঁড়া শ্বাসনালীর সাথে সংযুক্ত হয়ে ফেটে গেলে একত্রে প্রচুর পরিমাণ পুঁজ রক্ত বের হয়। ভীষণ জ্বর ও তার সাথে খুব খারাপ শারীরিক অবস্থা কখনো কখনো হাতের আঙুলের অগ্রভাগ মোটা হয়ে (ক্লাবিং) লক্ষ করা যায়।
অনেক সময় ঠিকমতো চিকিৎসা না হলে ফুসফুসের পর্দায় প্রদাহ, পুঁজ জমা এমনকি মস্তিষ্কেও বাহিত হয়ে ফোঁড়ার সৃষ্টি করতে পারে। রোগের লক্ষণ, বুকের এক্স-রে করা হলে সহজেই ফুসফুসের ফোঁড়া বোঝা যায়। এ ছাড়াও কফ ও রক্তের সাধারণ পরীক্ষা করে ফুসফুস কোডা নির্ণয় করা যায়। কফ বা রক্তের কালচার এবং সেনসিটিভিটি রিপোর্ট অনুযায়ী নির্দিষ্ট এন্টিবায়োটিকের মাধ্যমে ফুসফুসের ফোঁড়ার চিকিৎসা করা উচিত। গুরুতর অবস্থায় এন্টিবায়োটিক মুখে খেতে না দিয়ে ইনজেকশন আকারে দিতে হবে। আর একটি ব্যাপার মনে রাখতে হবে ফুসফুসের ফোঁড়ায় এন্টিবায়োটিক স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক দীর্ঘমেয়াদি দিতে হবে। কখনো কখনো ৪-৬ সপ্তাহ পর্যন্ত এন্টিবায়োটিক চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। ফুসফুসের ফোঁড়া চিকিৎসায় দ্রুত ও কার্যকর ফল পাওয়ার ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি বা পশ্চুরাল ড্রেনেজ-এর ভূমিকা অনেক বেশি।