ভেরিকোস ভেইন

এটা শিরার (রক্তনালী) একটি রোগ। শরীরের কোনো অংশের শিরা যদি প্রসারিত হয়ে যায় অর্থাৎ দৈর্ঘে ও প্রস্থে বড় হয়ে যায় তাকে ভেরিকোস ভেইন বলে। শতকরা প্রায় ২০ মানুষই এই রোগে আক্রান্ত। সাধারণত পা এবং হাতের শিরায় এই রোগটি বেশী হতে দেখা যায় তবে শরীরের যে কোনো স্থানের শিরায় ই এই রোগটি হতে পারে।

ভেরিকোস ভেইন রোগটি হবার নানাবিধ কারন আছে, সাধারনত ভেইন বা শিরার ভাল্ভ নষ্ট হয়ে যাবার কারনে এই রোগটি হয়। তবে শিরায় ইনফেকশন হলে, গর্ভাবস্থায়, পেটে টিউমার হলে বা পানি জমলে, পেশাগত কারনে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে (ট্রাফিক পুলিশ) হলেও এ রোগটি হতে দেখা যায়।

পায়ের গোড়ালি থেকে হাটুর মধ্যবর্তি অংশে (সেফানাস ভেইন-Saphenous vein) ভেরিকোস ভেইন বেশী হতে দেখা যায়, এ রোগ হলে শিরা বরাবর রোগী ব্যাথা অনুভব করে। চামড়ার ঠিক নীচে মোটা মোটা ভেইন গুলো দেখতেও বেশ কদাকার মনে হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসা না করালে পায়ে আলসার বা ঘা হয়ে যেতে পারে, পায়ের স্নায়ু নষ্ট হয়ে গ্যাঙ্গরিন হতে পারে। অল্প আঘাতেই এসকল শিরা থেকে রক্তপাত শুরু হবার সম্ভাবনাও খুব বেশী। প্রতিরক্ষা বাহিনী বা পুলিশ হিসেবে চাকরী করতে চাইলে ভেরিকোস ভেইন একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

অসুধ খেলে ভেরিকোস ভেইন ভালো হয়ে যাবার কোনো সম্ভাবনা নেই, অপারেশন ই এর একমাত্র চিকিৎসা। কোমড়ের নীচের অংশ অবশ করে এই অপারেশন করা হয়। স্ট্রিপার নামক একটি যন্ত্রের সাহায্যে ভাসকুলার সার্জন গন ঐ ত্রুটিযুক্ত শিরা টিকে তুলে নিয়ে আসেন।

ভেরিকোস ভেইন অপারেশনের আগে অবশ্যই জেনে নিতে হবে রোগীর ঐ পায়ের গভীর শিরা (Deep vein) টি ভালো আছে কিনা, অন্যথায় এই অপারেশন করা যাবেনা। এটা নির্ণয়ের জন্য রোগীকে অবশ্যই পায়ের ডুপ্লেক্স স্ক্যান পরীক্ষাটি করে নিতে হবে। ডিপ ভেইন ভালো না থাকা অবস্থায় এই অপারেশন করলে রোগীর পায়ের চরম ক্ষতি হবে।

ভেরিকোস ভেইন অপারেশনের পর পায়ে ক্রেপ ব্যান্ডেজ পড়তে হয়। অল্প কিছু বিরাম নেয়া ছাড়া প্রথম ৭-৮ দিন এটা পড়ে থাকতে হয়। এরপর প্রায় মাস তিনেক সারাদিন পড়ে থাকতে হয় এবং বিশ্রাম নেবার সময় বা রাত্রে খুলে রাখা যায়।

Related posts

Leave a Comment