স্বাভাবিক প্রসবের পর মা এবং শিশু সুস্থ থাকলে যতো দ্রুত সম্ভব শিশুকে মায়ের বুকে দুধ খেতে দেয়া উচিত। শিশু যখনই ইচ্ছা প্রকাশ করবে তখনই তাকে দুধ খেতে সূযোগ দেয়া উচিত। মায়ের প্রথম দুধ যা শাল দুধ নামে পরিচিত তা কোনো অবস্থাতেই ফেলে দেয়া যাবেনা, এটা শিশুর জন্য খুবই উপকারী এবং শিশুকে শালদুধ পানের সুযোগ থেকে কোনো অবস্থায় বঞ্চিত করা ঠিক হবেনা।
মায়ের দুধ নিরাপদ, পরিস্কার, স্বাস্থ্যসম্মত, সহজপ্রাপ্য, শিশু খুব সহজেই তা হজম করতে পারে এমন নানাগুনে সন্বেবেশিত। একমাত্র মায়ের দুধই শিশুর প্রইয়োজনিয় তাপমাত্রায় থাকে এবং শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়। মায়ের দুধে শিশুর রোগ প্রতিরোধের এমন কিছু উপাদান আছে যা শিশুকে অনেক রোগের হাত থেকে বাচায় এবং মস্তিস্ক গঠন ও বৃদ্ধিতে সহয়তা করে, মায়ের দুধ পান শিশুর চোয়াল, দাত ও মাড়ি গঠনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। মায়ের দুধপান করা শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগেনা এবং এসব শিশুর শিশুমৃত্যুর হার ও কম।
স্তন্য দানে মায়ের সাথে শিশুর একটি বিশেষ বন্ধন তৈরী হয় এবং এর ফলে মায়ের স্তন ক্যান্সার হবার ঝুকি কমে যায়। প্রাকৃতিক পরিকল্পনার একটি অঙ্গ হলো এই দুগ্ধদান, এর ফলে মাইয়ের ডিম্বানু নিষেকের সময় পিছিয়ে যায় এবং দ্রুত আরেকটি সন্তান হবার ঝুকি কমে যায়। সন্তান প্রসবের পর মহিলাদের যৌনাঙ্গ/প্রসবের পথ পূর্বাবস্থায় দ্রুত ফিরিয়ে আনতে স্তন্যদান বিশেষ কার্যকরি ভূমিকা রাখে।
অনেক সময় শিশু এতো অপরিণত থাকে যে তার পক্ষে মায়র দুধ টানা সম্ভব হয়না তখন মায়ের স্তন থেকে অন্য প্রক্রিয়ায় দুধ সংগ্রহ করে শিশুকে খাওয়াতে হবে। তবে মা যদি যযেষ্ট দুধ প্রদান করতে সক্ষম না হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অন্য কোনো খাদ্যের ব্যবস্থা করা যেতে পারে কিন্ত স্মরন রাখতে হবে যতক্ষন মা ও শিশু সুস্থ আছে মায়ের দুধই শ্রেষ্ঠ দুধ।
মায়ের খুব জটিল কোনো মানসিক ব্যাধি থাকলে, দুই স্তনে ফোড়া থাকলে, টিবি, খীচুনি, জটিল ইনফেকশন থাকলে অথবা মা ক্যান্সার বা অন্যরোগের কারনে শিশুর ক্ষতি হবে এমন কোনো অসুধ গ্রহন করতে থাকলে শিশুকে মায়ের দুধ দেয়া যাবেনা। মুমূর্ষু মায়ের স্তন্য দানও শিশুর জন্য অত্যাবশ্যক নয়।