জানুন কোনগুলো হাড় ক্ষয়কারী খাদ্য উপাদান

দেহের কাঠামো গঠিত হয় অস্থি বা কংকাল দিয়ে যা বহন করে সমগ্র মানবশরীরকে। হাড়ের রোগগুলোর মাঝে অস্টিওপোরোসিস বর্তমানে সব থেকে বেশি দেখা যায় যার কারনে  ক্ষয়ে যেতে থাকে হাড়ের দৃঢ় গঠন। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো হাড় ক্ষয়ে সহায়তা করে আবার কিছু খাবার সাহায্য করে গঠনে। আমাদের আজকের আলোচনায় শুধুমাত্র খাদ্যের ভূমিকা নিয়ে কথা বলবো।

হাড়ের দৃঢ় গঠনে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, ফসফরাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর পরিমাণে হেরফের হলে ফলাফল হিসেবে আসে ভঙ্গুর অস্থি।

প্রথমে বলতে হয় অতিরিক্ত লবণ গ্রহনের কথা। রান্না খাবার ছাড়া আর কোন ভাবে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া চলবে না। চিপস, বিভিন্ন ফাস্ট ফুড, কাচা খাবারে বা সালাদে মেশানো লবণ খুব খারাপ। এগুলো বন্ধ করুন। লবণ বা সোডিয়াম ক্লোরাইড দেহ থেকে ক্যালসিয়াম বের করে  দিয়ে হাড়কে করে ফেলে দুর্বল।

তরুণ তরুণীদের পছন্দের জিনিস সফট ড্রিঙ্কস যেগুলো সুপ্তভাবে হাড়কে ক্ষয় করে যাচ্ছে। এসব ড্রিঙ্কসে রয়েছে ফসফরিক এসিড যা মূত্রের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম কে বের করে দেয়, ফলাফলঃ অস্থি ক্ষয়।

তৃতীয় বিপদ ক্যাফিন যা আমরা পাই চা বা কফি থেকে। চা বা কফি পান মোটেও অপকারী কিছু নয় কিন্তু মাত্রা রাখতে হবে। কফি পানে দৈনিক বড় জোর এক বা দুই কাপ, এর বেশি নয়। চা তুলনামুলক কম ক্যাফিন ধারন করে, তাই চা পানে তেমন সমস্যা নেই।

মাংস খেতে ভালো লাগে? রসনায় দিন লাগাম। অতিরিক্ত মাংস মানে অতিরিক্ত প্রোটিন আর এই প্রোটিন দেহে তৈরি করে অতিরিক্ত এসিড যাকে নিস্ক্রিয় করতে শরীর ক্যালসিয়ামকে বিসর্জন দেয়।

অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার বা পানীয় থেকে দূরে থাকুন।
পরিহার করুন মদ্যপান। মদ ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা দেয়।
বর্জন করুন এমন সব খাবার যেগুলো অতিরিক্ত চর্বি যুক্ত, প্রাণীজ চর্বি একদম মানা।

এবার জানবো অস্থি সুরক্ষায় নিয়োজিত খাবার সম্পর্কেঃ

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার যেমনঃ দই। দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি যাদের উভয়েই মজবুত হাড়ের জন্য দরকার। তবে দুধ থেকে সর তোলা থাকলে ভালো।
গ্রহণ করুন এমন সব সবজি যেগুলো ক্যালসিয়ামে পরিপূর্ন। সবজির মাঝে পালং শাক,টমেটো, ব্রুকোলি, কাঠবাদাম, মিস্টি আলু, মিস্টি কুমড়া সহ সবুজ পাতাওয়ালা অন্যান্য সবজী ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। গ্রহণ করুন তাজা যেকোনো ফল।

সয়াবিন জাত খাবারের মাঝেও রয়েছে বেশ ভালো পরিমাণে ক্যালসিয়াম।

ছোট মাছ খেলে কাটা সহ চিবিয়ে খান। গরু খাসির নেহারী খেতে পারেন। নরম হাড় চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন, কাজে দেবে। মাছের তেলে পাবেন ভিটামিন ডি।
অনেকে শুঁটকি মাছ পছন্দ করেন। দেখা গেছে শুঁটকিতে কালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর পরিমাণ তুলনামুলক বেশি।
উন্নত বিশ্বে খাবারের সাথে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ক্যালসিয়াম যুক্ত করা হয় যদিও আমাদের দেশের  প্রেক্ষাপটে এসব খাবার নিয়ে আলোচনা না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

অস্থি বা হাড় গঠনে রয়েছে আরো নানান সব পদ্ধতি তবে খেতে বসে একটু চিন্তা করে খেলেই যদি আমরা এসব কৃত্রিম পন্থা থেকে অনেকটা দূরে থাকতে পারি তবে সেটাই কি ভালো নয়?

 

 

 

ডা. রায়হান কবীর খান

 

Related posts

Leave a Comment